Skip to Content

কুরআনের পরিচয় ও সংকলনের ইতিহাস

পৃথিবীতে  নিজের প্রতিনিধি হিসেবে আল্লাহ মানুষকে কিছু দায়িত্ব দিয়েছেন।  ইচ্ছামত যা খুশি করার বা যেভাবে ইচ্ছা চলার সে সুযোগ রাখেননি।  তাদের করণীয় নির্দেশ করেছেন।  কাজের শিমাও নীতি ঠিক করে দিয়েছেন।  পৃথিবীতে মানুষ তাই দায়িত্বহীন কোন সৃষ্টি নয়।  এজন্য আল্লাহ তাআলার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে।  মহান আল্লাহতালার মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে মানুষ তার হুকুম আহকাম মেনে চলবে।  তার নিয়োগ করবে কিন্তু তাঁর অবাধ্য হবে না।  মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে আল্লাহর ইবাদতের জন্য।  আল্লাহ তা'আলা বলেন,

আমি জিন ও মানুষকে আমার এবাদত করার জন্য সৃষ্টি করেছে  সূরা যারিয়াত 56

কিন্তু সেই মানুষ  পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত হয়।  প্রিয়সৃষ্টির পথভ্রষ্টতায় আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ব্যথিত হন।  তাদেরকে সঠিক পথ দেখানোর জন্য হিদায়াত দিয়ে প্রেরণ করতে শুরু করেন বিশেষভাবে মনোনীত ব্যক্তিদের।  এরা আল্লাহর নবী রাসুল।  আল্লাহর নবী রাসুলদের নিকট কিতাব নাযিল করেন।  তারই ধারাবাহিকতায়  নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট নাযিল হয় পবিত্র কুরআনুল কারীম।


আল কোরআনের পরিচয়

কুরআন আল্লাহর কালাম। বিশ্বমানবের সঠিক পথের দিশা।  মহান আল্লাহ মানুষের সফলতা ও ব্যর্থতার কারণ  এবং দু'রকম নির্দেশনায় উল্লেখ করেছেন। কোন পথ গ্রহণ করলে মানুষ জীবনে সফলতা লাভ করবে,  আর কোন পথ গ্রহণ করলে হবে ব্যর্থ, সে বিষয়ে বিস্তারিত মূলনীতি পেশ করে কোরান নিজের  কালোত্তীর্ণ, সর্বজনীন ও সর্বময় কল্যাণকামী রূপটি ভাস্বর করে তুলেছে।


আল্লামা আবুল মাআলী রহমাতুল্লাহ আলাইহি   কুরআনুল কারীমের 55 টি নাম উল্লেখ করেছেন।  কুরআনুল কারীমের মূল নাম পাঁচটি।

আল কুরান আল ফুরকান আশিকির আল কিতাব আত্তাক ফিলম  এসব নাম কোরআন নিজেই দিয়েছে

* আল ফুরকান এর জন্য সূরা আল ইমরান এর প্রথম আয়াত,  জিকিরের জন্য সূরা আল ইমরানের 58 তম আয়াত,  সূরা হিজরের ষষ্ঠ আয়াত,  এবং সুরা সোয়াদের অষ্টম আয়াত ইত্যাদি, আল কিতাব এর জন্য সুরা বাকারার প্রথম আয়াত,  সূরা নাহল এর 64 ও ৮৭ তম আয়াত, আর তানজিলের জন্য সূরা ইয়াসিনের পঞ্চম আয়াত,  ওয়াকিয়ার অষ্টম আয়াত  এবং আল হাক্কার  69 তম আয়াত  দেখুন।


কোরআনের আভিধানিক পরিচয়

প্রখ্যাত মুফাসসির ইমাম শাফি রহমাতুল্লাহ এর মতে  আল কুরআন  একটি নাম বাচক বিশেষ্য।  আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ সর্বশেষ কিতাবের নাম এবং এ নাম তার জন্য নির্ধারিত।  কোন ধাতু থেকে নামটি নিষ্পন্ন নয়।  সেজন্য অন্য কোন ধর্মগ্রন্থ আল-কোরআন রাখা যায় না।

ইমাম আশআরি, আবু উবাইদ, ইমাম রাগিব, ফাররাহ ও যুজাম প্রমুখের মতে, আল কোরআন একটি ইসমে মুশতাক বা উৎপন্ন বিশেষ্য।  এ কারণেই আল কোরান নয় বরং আল কোরআন।

Encyclopaedia  of Britannica  Quran is the most widely read book in the world


আল-কোরআন এর পারিভাষিক পরিচয়

আল্লামা  জারকানি বলেন, কুরআন মাজীদ হল কালাম সমষ্টি।  মুতাওয়াতির বা অবিচ্ছন্ন সনদে বর্ণিত।  কুরআন তিলাওয়াত করা হয় এবং যার তিলাওয়াত আল্লাহর ইবাদত হিসেবে গণ্য।

আল্লামা আবুল বারাকাত আন্নাফি বলেন  আল কুরআন কিতাব যা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর নাযিল করা হয়েছে,  এবং সন্দেহাতীত পদ্ধতিতে ধারাবাহিকভাবে সংকলিত হয়েছে; আর এটি শব্দ ও অর্থের সমন্বিত নাম।


ওহিও তার হাকিকত

কুরআনুল কারীম দুজাহানের সরদার হরযত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর উপর অবতীর্ণ হয়েছে। ওহী সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা আবশ্যকীয়।

মহান আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করার সাথে সাথে তার মধ্যে এমন তিনটি বস্তু দান করে দিয়েছেন যেগুলোর মাধ্যমে সে বিভিন্ন জ্ঞান লাভ করতে পারে।

প্রথমত মানুষের পঞ্চ ইন্দ্রিয় শক্তি।  অর্থাৎ চক্ষু জিহ্বা ত্বক

দ্বিতীয়তঃ মেধা শক্তি ও বিবেক

তৃতীয়ত  ওহী

মানুষ পঞ্চ ইন্দ্রিয় শক্তি,  মেধাশক্তি ও বিবেকের দ্বারা  যে গান লাভ করা যায় না তাই।

ওহীর শিক্ষা

ওহীর মাধ্যমে তাদেরকে ঐসব বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া হয় যা তারা নিজেদের ইন্দ্রিয় শক্তি ও মেধা শক্তির মাধ্যমে অর্জন করতে সক্ষম হয় না।  যে বিষয়গুলো নিরেট ধর্মীয় বিধিবিধান সংক্রান তো হতে পারে তেমনি হতে পারে প্রার্থী প্রয়োজন সংক্রান্ত।  যেমন আলাইহিস সালামকে নৌযান তৈরি করার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ বলেন

আমার ওহীর মাধ্যমে আমার তত্ত্বাবধানে নৌযান তৈরি করুন সূরা হুদ অনুরূপভাবে হযরত দাউদ আলাই সালাম কে লৌহবর্ম তৈরীর প্রকৌশলী জ্ঞান শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।  হযরত আদম আলাইহিস সালামকে বিশেষ বস্তুর মাধ্যমে শিক্ষা দেয়া হয়েছে।  এমনকি এক বর্ণনায় পাওয়া যায় সর্বপ্রথম চিকিৎসা বিজ্ঞানে ওহীর মাধ্যমে অবতীর্ণ হয়েছে।  আব্দুল আজিজ রহমতুল্লাহি আলাইহি আল আকাইদ

ওহীর প্রকারভেদ

হযরত আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মিরী রহমাতুল্লাহ আলাইহি বলেন

ওহী প্রথমত তিন প্রকার

আত্মিক  ওহী,  আল্লাহর কালাম

ফেরেশতাদের মাধ্যমে বেশি

মাক্কি ও মাদানি সুরা